চিকন আলী মাতব্বরের রাজভোগ

সাধারণত আমি সুখী একজন মানুষ কারণ আমি একজন ভুলে যাওয়া মানুষ। যে কোন ব্যপার, ঘটনা, নাম, চেহারা আমি খুব তাড়াতাড়ি ভুলে যাই, ফলে কোন বেদনা আমাকে নাড়া দিতে পারে না।
কিন্তু গতকাল থেকে একটা ঘটনা ভুলতে পারছি না। কোনভাবেই না। মাথায় সারাক্ষণ ঘুরপাক খাচ্ছে, কিভাবে সম্ভব! একটা মেয়ে!
বালি শহরের চারপাশেই সব ইউরোপীয় পর্যটকে ভরপুর। তারমধ্যে সবচেয়ে বেশি ডেনপাসার এলাকার কুতা এলাকায়। এর কারণ এই এলাকাটি এয়ারপোর্টের কাছাকাছি। মাঝেমধ্যে ভ্রম হয় এটি ইউরোপের কোন শহর কিনা। কত সুন্দর, অসাধারণ নরনারী চোখে পড়ে! কিন্তু হাবলার মত চেয়ে থেকে বাঙালের বদনাম কুড়াতে ইচ্ছে করে না।
রাত ১০ টার দিকে স্কুটি নিয়ে রুমে ফিরছিলাম। হঠাৎ দেখলাম দুটি মেয়ে দুটি ছেলের হাত ধরে যাচ্ছে৷ এটি খুবই নরমাল ব্যাপার, কিন্তু একটাই কারণে আমার চোখে মেয়েটা ধরা পড়েছে সেটি হচ্ছে মেয়েটি মোটা। আমি মোটা মেয়ে অত্যধিক পছন্দ করি। তার উপর এত সুন্দর মেয়ে আগে দেখেছিলাম কিন মনে করতে পারছিলাম না। সোনার মত গায়ের রঙ, ঠোঁটটা অস্তগামী সূর্যের মত, গালে যেন মেহেদি বাটা লাগিয়েছে। লম্বায় হবে ৫ ফিট ৯/১০ ইঞ্চি, সে অনুযায়ী মোটা। লাল একটি শর্ট ফ্রক এবং শর্ট স্কার্ট পড়েছে দুজনই। মোটা মেয়েটির গলায় একটা লকেট। চুল জুটি বাঁধা।
মেয়ে দুটির সাথে দুটি ছেলেই স্থানীয়। হয়তোবা ট্যাটু আঁকে এমন ছেলেদের সাথে মজা করে হাঁটছে। এখানে পানের দোকানের মত ট্যাঁটুর দোকান।
কিন্তু ছেলেটি দেখতে অবিকল নিউমার্কেটের পকেটমারের মত, চুলগুলো লম্বা। উচ্চতা ৫ ফিট ৩/৪ ইঞ্চি। সত্যি বলতে মেয়েটার বুকের সমানও না ছেলেটা, তার উপর চিকন আলী মাতব্বর। মেয়েটা এক ধাক্কা দিলে বহুদূরে উড়ে যাবে৷
আমি মদ খাই না, সিগারেট খাই না। ফলে নাইট ক্লাবে যাওয়ার প্রয়োজন নেই৷ কিন্তু দেশ থেকে একজন বলল অভিজ্ঞতা নিয়ে আসার জন্য৷ কিছু বলতে হলে জানতে হবে এই নিয়মে স্থানীয় এক দোকানদার, অস্ট্রেলিয়ান এক পরিচিত মদখোরকে নিয়ে ক্লাবে গেলাম। ক্লাবের নাম ইঞ্জিন রুম।
তারা একটি বিয়ার এবং একটি ককটেল নিয়ে আমাকে সহ এন্ট্রি করাল।
কিন্তু ক্লাবেই ঢুকেই আমি অবাক! সেই লাল মেয়ে গুলি! ছেলেগুলির সাথে! আরো বিস্ময়কর ব্যাপার মেয়েটি ছেলেটিকে চুমু খায় ১০ সেকেন্ড পর পর ১০ মিনিটের জন্য।
ছেলেটি শর্ট, তাই মেয়েটি নিজেই ছিঁচকা চোরের মত চেহারার ছেলেটার দিকে একটানা চেয়ে থাকে অনন্তকালের মতন! বিশ্বাস করুন, এমন মুগ্ধ নয়নে এমন গভীর ভালোবাসা দিয়ে এমন বৈষম্যমূলক একটি জুটিকে কখনোই কখনোই দেখিনি। কেউ দেখেছে কিনা জানিও না।
আমার মাথার চুল ছিঁড়ছিলাম, ছেলেটার স্থানে নিজেকে ভাবছিলাম। মাঝে মাঝে উঠে শাকিরার মত নাচছিল মেয়েটি। এক ফাঁকে আমি নিজেই ভাব করার চেষ্টা করলাম। যদিও আমার উচ্চতা অনুযায়ী মেয়েটার বুক বরাবর পর্যন্ত তাকাতে পারছিলাম। ফলাফল শুন্য৷ ঐ ছেলে ছাড়া কারো দিকেই মেয়ের মনযোগ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *